ভারতের মুরাদাবাদে গরু জবাইয়ের অভিযোগে মুসলিম যুবক নিহত....
ভারতের মুরাদাবাদে গরু জবাইয়ের অভিযোগ তুলে এক মুসলিম যুবককে লাঠি, রড দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত যুবকের নাম মোহাম্মদ শাহেদিন কুরেশি (৩৭)। এলাকাবাসীর হামলার শিকার হয়ে সোমবার রাতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর মুসলিম প্রধান এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মৃত্যুর বিবরণ
মুরাদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার রণ বিজয় সিং জানান, গুরুতর আহত শাহেদিনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত সাড়ে ১২টার সময় তার মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
ঘটনার বিবরণ
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, সোমবার বিকেলে মণ্ডী সমিতি এলাকায় শাহেদিন ও তার সঙ্গীদের গরু জবাই করার অভিযোগ তোলেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে জনতা ভিড় জমায়। তার সঙ্গীরা পালিয়ে গেলেও, শাহেদিনকে আটকে রেখে তাকে গালিগালাজ ও নির্মমভাবে মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলে একটি মৃত গরু পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
আইনি পদক্ষেপ
মজহোলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে শাহেদিনের ওপর হামলার ঘটনায় তার ভাই মোহাম্মদ শাহজাদের অভিযোগে একটি হত্যা মামলা (আইপিসি ধারা ৩০২) দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি, গরু জবাইয়ের অভিযোগে শাহেদিন ও তার সঙ্গীর বিরুদ্ধে আরও একটি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। বুধবার তার সঙ্গী মোহাম্মদ আদনানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পারিবারিক তথ্য
শাহেদিন ছিলেন একজন বডিবিল্ডার, যিনি একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। তিনি স্ত্রী রিজওয়ানা ও তিন সন্তান—আরাম (১৩), আশি (১১), এবং ইবজান (৯)—সহ আসলতপুর এলাকায় বাস করতেন।
স্ত্রীর মন্তব্য
শাহেদিনের স্ত্রী রিজওয়ানা বলেন, “একটি পশুর মৃত্যু নিয়ে কারো জীবন নেওয়ার অধিকার তাদের নেই। তারা কারা, যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিলো? যা ঘটেছে, তা নৃশংস এবং অন্যায়।”
ভিডিও প্রকাশ
হামলার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে রক্তাক্ত ও গুরুতর আহত অবস্থায় শাহেদিনকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর ঘটনাটি আরও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।